Monday, March 29, 2021

অভিশপ্ত খুনির দল ভবিষ্যৎ পরিণতি দেখে নেয়! [ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হত্যাকাণ্ড]

“আর যে ব্যাক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছকৃতভাবে হত্যা করে, তার প্রতিদান হল জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার উপরে ক্রধাহ্নিত হয়েছেন এবং তাকে তিনি করেছেন অভিশম্পাত। আর তার জন্য তিনি প্রস্তুত করে রেখেছেন বিরাট এক আযাব”। [সূরা নিসা ৯৩]

‘ওই সত্ত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন, অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে (গোটা) পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার চাইতে (একজন) মুমিনকে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করা অধিক মারাত্মক (অপরাধ ও পাপ)’। [সুনানে নাসায়ী, হাদিস ৩৯৮৬]
আবু হুরায়রাহ রা. এবং আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَأَهْلَ الْأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبَّهُمْ اللَّهُ فِي النَّارِ. رواه الترمذي : رقم ١٣٩٨ ، وصححه الألباني في صحيح الترمذي – ‘যদি আসমানবাসী ও জমিনবাসী (সকলে মিলে না-হক্ব ভাবে কোনো) মুমিনের হত্যায় শরিক হয়, (তাহলে) আল্লাহ অবশ্যই তাদের(সকল)কে দোযখে নিক্ষেপ করবেন’। [সুনানে তিরমিযী, হাদিস ১৩৯৮]
مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا عَلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا
নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোন কারণে যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলো সে যেন দুনিয়ার সমস্ত মানুষকে হত্যা করলো৷ [সূরা আল-মায়েদাহ ৩২-৩৪]
# আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- أَوَّلُ مَا يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي الدِّمَاءِ . رواه مسلم , رقم ١٦٧٨ ; و النسائى : ٧/٨٣ ; و ابن ماجه : ٢٦١٥ – ‘কেয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথমে যে জিনিসের বিচার করা হবে সেটা হবে রক্ত (খুন) সম্পর্কে’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ১৬৮০]
# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ أَشَارَ إِلَى أَخِيهِ بِحَدِيدَةٍ ، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَلْعَنُهُ ، حَتَّى يَدَعَهُ وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ لِأَبِيهِ وَأُمِّهِ . رواه مسلم في صحيحه , كتاب الْبِرِّ وَالصِّلَةِ وَالْآدَابِ , بَابُ النَّهْيِ عَنِ الْإِشَارَةِ بِالسِّلَاحِ إِلَى مُسْلِمٍ : رقم ٢٦١٦ – ‘যে (মুসলমান) তার (আরেক মুসলমান) ভাইয়ের দিকে কোনো হাদিদাহ (ধারালো-অস্ত্র) দিয়ে ইশারা/তাক্ করে, তখন নিশ্চই ফেরেশতারা তাকে লা’নত করতে থাকে যাবৎ না সে তা (করা) থেকে ফিরে আসে -চাই তার ভাইটি তার পিতা দিককার (ভাই) হোক বা তার মাতার দিককার’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ২৬১৬; সুনানে তিরমিযী- ৪/৪০৩ হাদিস ২১৬২; মুসনাদে আহমদ- ২/২০৬]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
‘যে ব্যাক্তি একটি কথার দ্বারাও (আল্লাহ তাআলা কর্তৃক কোনো) হারামকৃত হত্যায় শরিক থাকে, সে কিয়ামতের দিন তার দুই চোখের মাঝখানে (কপালে এই কথা) লিখিত অবস্থায় আসবে: আল্লাহ’র রহমত থেকে বঞ্চিত’। [আল-মু’জামুল কাবির, ত্বাবরাণী- ১১/৭৯]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন- قُتل بِالْمَدِينَةِ قَتِيل على عهد رَسُول الله لم يُعلم من قَتله ، فَصَعدَ النَّبِي الْمِنْبَر فَقَالَ : يَا أَيهَا النَّاس يقتل قَتِيلوَأَنا فِيكُم وَلَا يعلم من قَتله لَو اجْتمع أهل السَّمَاء وَالْأَرْض على قتل امرىء لعذبهم الله إِلَّا أَن يفعل مَا يَشَاء . رواه البيهقي في شعب الإيمان : ٤/٣٤٧ رقم ٥٣٥١ , اسناده حسن كما في الجامع لشعب الإيمان : ٧/٢٦٠ رقم ٤٩٦٧ –
“(একবার) রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর জামানায় মদিনায় (এমন এক ব্যাক্তি) নিহত হল, যার নিহত হওয়ার কথা (কারোর) জানা ছিল না (যে, কে বা কারা কি কারণে তাকে হত্যা করেছে)। তখন নবী ﷺ মিম্বরে দাড়িয়ে বললেন: ‘হে লোক সকল! তোমাদের মাঝে (এক ব্যাক্তি) নিহত হল, আর কে তাকে হত্যা করেছে, তা জানা যায়নি। (শুনে রাখো) যদি কোনো ব্যাক্তির হত্যায় আসমান ও জমিনবাসী (সকলে) একজোট হয়, আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই আযাব দিবেন। অবশ্য তিঁনি যা চান তাই করেন”। [শুয়াবুল ইমান, ইমাম বাইহাকী- ৪/৩৪৭
# আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ، وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا . رواه بخارى , كتاب الديات , باب إثم من قتل ذميا بغير جرم , رقم ٢٩١٤ و ايضا ٣١٦٦ ; و النسائى : ٨/٢٥ رقم ٤٧٤٩ ; و ابن ماجه : رقم ٢٦٨٦ ; و احمد : ٢/١٨٦ – ‘যে (মুসলমান কোনো) মুআহিদ’কে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করে, সে জান্নাতের ঘ্রানও আস্বাদন করতে পাবে না -যদিও সেই ঘ্রান (জান্নাতের) চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যাবে’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ২৯১৪, ৩১৬৬]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
“নিহত ব্যাক্তি কেয়ামতের দিন (তার) হত্যাকারীকে (আল্লাহ তাআলার আদালতে) নিয়ে আসবে; (তখন) তার (নিজের) মাথার অগ্রভাগ (তার গলা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তার এক) হাতে (ধৃত) থাকবে এবং তার গলার শিরাগুলি থেকে রক্ত পড়তে থাকবে। তখন সে বলবে: ‘হে প্রভু ! একে জিজ্ঞেস করুন, কেনো সে আমাকে হত্যা করেছিল, (আমি আজ তার বিচার চাই)’? এমন কি সে তাকে (আল্লাহ’র) আরশের সন্নিকটে নিয়ে যাবে” [সুনানে তিরমিযী, হাদিস ৩০২৯]