Thursday, August 11, 2022

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাইকে নিয়ে ট্রল এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখানো লোকজনের চরিত্র


ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাই সংগঠনের অন্যতম মুখলিস দাঈ, প্রাজ্ঞ সংগঠক এবং সেরা বক্তা। কুরআনকে নিজের মাঝে এমনভাবে জড়িয়ে নিয়েছেন যে কথায় কথায় কুরআনের আয়াত বের হয়।

কিন্ত ইতিমধ্যে ভাইয়ের কিছু আবেগময় বক্তব্যের কিছু ঘটনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের সাথে সাথে ট্রলও করা হচ্ছে, ইতিপূর্বেও হয়েছে।
এবং এই অন্যায্য ট্রলে আমাদের জামায়াত শিবিরের ভাইয়েরা অত্যান্ত কষ্ট পায়, কষ্ট পেয়ে কেউ 'এইভাবে ট্রল করে মাসুদ ভাইয়ের ইজ্জতহানী' করাকে অন্যায়ের চোখে দেখে চুপ থাকেন, কেউ পালটা ট্রল করতে শুরু করে, আবার কেউকেউ সংশ্লিষ্ট (আরেফিন মোহাম্মদ) ব্যক্তির বিদায়ের ঘটনার সাথে নারী ঘটিত কেলেংকারীর ভয়ংকর অপবাদ জুড়ে দেয় (বিভিন্ন মহাপবিত্র মিথ্যুক দায়িত্বশীলদের রেফারেন্স কোট করে) আবার কেউ তার পদের লোভের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মিথ্যাচার করে তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়, আবার কেউ গালাগালির আশ্রয় নিয়ে তাকে দ্বীন থেকে খারিজ করে দেওয়ারও চেষ্টা করে।
আর এসব পালটা প্রতিক্রিয়া এসেছে মাসুদ ভাইকে যারা ভালোবাসে তাদের কষ্টের স্বাভাবিক বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। ইটা খুব সিম্পল হিসেব!
কিন্তু দুঃখজনক হলো, একটু আগে যারা মাসুদ ভাইকে নিয়ে ট্রলের বিপরীতে বিভিন্ন নছীহত করে এসেছে ট্রলকারীর পোস্টের কমেন্টে ও নিজেদের ওয়ালে পোস্টানোর মাধ্যমে।
দেখলাম একটুপরেই এরাই আবার সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী হাফিজাহুল্লাহকে নিয়ে ট্রল ও নোংরা আক্রমণ করে শায়েখের ইজ্জতহানী করার মহান দায়িত্ব পালনে ঝাপিয়ে পড়ে। শেখ মুজিবকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করা ও শেখ হাসিনা জাফরীকে সাহেবকে সন্মান করার কথা বলা যেনো জাফরী হুজুরের জন্য যেনো কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানে তিনি মহাপাপ করে ফেলেছেন।
আজীব ব্যাপার! (ট্রলবাজদের ইচ্ছে শেখ মুজিবকে নিয়ে স্মৃতিচারনের সময় জাফরী সাহেব যেনো "শেখ মুজিবের সাথে 'ধর-মার-কাট' টাইপের সম্পর্ক ছিলো" এমন টাইপের কিছু বলুক কিংবা শেখ মুজিবকে দু'চারটে গালি দিয়ে স্মৃতিচারণ শুরু করুক!)
অথচ একটু আগেই এদের নিয়ে আশা করেছিলাম, এবার বুঝি এরা বুঝবে 'হাসি তামাশা' করে অন্যের অনুভূতিতে কষ্ট দেওয়ার মর্মবেদনাটা কেমন!
পরে বুঝলাম জাহিলদের থেকে এরকম কিছু আশা করা উচিত হয়নি, কারণ 'লাহুম কুলুবুহুম আকিন্না'।
সংগঠনের এই ট্রলবাজগুলো মনে করে ট্রল করার অধিকার একমাত্র তাদেরই আছে, এবং অনেকক্ষেত্রে এই ট্রলবাজীকে দ্বীনের দায়িত্ব মনে করেই পালন করে।
বস্তুত এই লোকগুলো ইসলামী সংগঠনগুলোর মাঝে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের সম্পর্ক তৈরি হওয়ার রাস্তায় অনবরত কাটা বিছানো ও বিভেদের দেয়াল তোলার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকে।।
আল্লামা সাঈদীর পরে এদেশে তারিক মনোয়ারের চাইতে বড় কোন ওয়ায়েজ দায়ী ছিলোনা। যার আলোচনার প্রভাব ছিলো মারাক্তক ধরণের। যার আলোচনা শুনে মানুষ দ্বীন ও দ্বীনি আন্দোলনে সক্রিয় হতো। তিনি এদেশের ইসলাম ও জামায়াতে ইসলামীর সম্পদ।
কিন্তু তিনিও এই ট্রলবাজদের নোংরা হাস্যরস থেকে বাঁচতে পারেনি, অথচ তার কথায় 'অতিরঞ্জনের শংকা' ছাড়া আর কোনো বিশেষ সমস্যা ছিলোনা, অথচ এই একই অতিরঞ্জনের সমস্যা থেকেই মাসুদ ভাইয়েকে নিয়ে ট্রল হচ্ছে।
একইভাবে, মাসুদ ভাইকে নিয়ে আরেফিন মোহাম্মদের ট্রলে কষ্ট পাওয়া এই ট্রলবাজেরাই চরমোনাই পীর ও তাদের আলিমদের বক্তব্য নিয়ে হাস্যরসের মজমা বসায়, বাইন মাছ, বেগুন, ও বাঘের ঘটনাগুলো তাদের আবেগের বিষয় এবং এগুলো তারা আবেগময় কান্নাজড়িত কন্ঠে আলোচনা করেন এবং স্রোতারাও শুনে কান্নাকাটি করেন, যেমন মাসুদ ভাই সহ সংগঠনের অনেক নেতারা এরকম বহু অলৌকিক ঘটনা বয়ান করে এবং সেগুলো শুনে সংগঠনের কর্মীরা চোখের জল ফেলেন।
কিন্তু যখন আমরা চরমোনাইয়ের এসব কারামাত নিয়ে তামাশা করি তখন তারা কেমন কষ্ট পেতে পারে তা একবারও বিবেক খাটিয়ে চিন্তা করিনা!
ভাবটা এমন ❝আমরা ট্রল করলে আরাম , আর অন্যেরা করলে হারাম!❞
কাজী ইব্রাহীম হাফিজাহুল্লাহর মত মুহাক্কিক সজ্জন আলীমও (মাসুদ ভাইকে নিয়ে ট্রল করায় কষ্ট পাওয়া) ট্রলবাজ লোকদের ট্রল থেকে রক্ষা পায়নি।
আলিম ওলামাদের নিয়ে ট্রলের ক্ষেত্রে ট্রলবাজ ঘৃণাজীবী ইসলামিস্ট আর শাহবাগীরা কোন ফাঁকে পরস্পর পরস্পরের সহোদর ভাই হয়ে যায়, এরা টেরও পায়না।
টের তখন পায় যখন নিজেদের নেতা ও দল নিয়ে ট্রল শুরু হয়, তখন চলতে থাকে ফাতওয়া আর ট্যাগের কামান, একইসাথে চরিত্রহনন।
এই বুঝ থাকা উচিত, যে ধরণের ভুল নিয়ে অন্যদের অপমানিত করি, এই একই ধরণের ভুল আমরা নিজেরাও করি আমাদের নেতারাও করে, যেহেতু তারাও মানুষ। আমাদের নেতা ও দল নিয়ে যখন কেউ হাসি তামাশা করে তখন আমরা যেভাবে ব্যথিত হই একইভাবে আমার ট্রলের আক্রান্ত লোকেরাও ব্যথিত হয়।
ট্রলবাজী ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের একাংশের চরিত্র নষ্ট করে দিয়েছে। কোনোভাবে নিজের মতের সাথে হুবহু না মিললেই কাম সারছে, ঐ ব্যক্তির ইজ্জত হনন করতে একটুও দ্বিধা করবেনা, দ্বিমতের জায়গাটা হোক একান্তই রাজনৈতিক বুঝাপড়ার বা অন্যকোনো সাধারণ ইস্যু।
যাইহোক, যাহা অন্যের জন্য অপছন্দ করেন, তাহা নিজের জন্য অপছন্দ করুন। দেখবেন আস্ত আস্তে হিপোক্রেসি বিদায় নিবে। ক্বলব পরিস্কার হতে থাকবে।।
আল্লাহ মাসুদ ভাইকে সন্মানিত করুন। তাকে আরও সত্যাশ্রয়ী, বিনয়ী ও প্রজ্ঞাবান করুন। আমিন।