Saturday, July 9, 2022

সমকামিতা ও ১০ মিনিটস: প্রতিবাদী জনরা বনাম সেক্যুলামিস্ট লিবারেল মুসলিম (৮ জুলাই ২০২০)

সমকামিতা ও ১০ মিনিটস স্কুলের প্রশ্নবিদ্ধ কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবাদকারী ও যৌক্তিকভাবে সমালোচনাকারীদেরকে সেক্যুলামিস্ট গুন্ডারা অনলাইনে যে হারে কোপাচ্ছে, মনে হচ্ছে এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় থাকলে এতোদিনে প্রতিবাদী ভাইদের প্রতিক্রিয়াশীল, জঙ্গি, ও উগ্রবাদী ট্যাগ দিয়ে গণহারে ক্ব*তল করতো।

আমার দেখামতে, সেক্যুলামিস্টদের চাইতে উগ্রবাদী ক্বিতালি আর কেউ নেই। সুযোগ পাইলে এরা আপনাকে দ্বীনের খাতিরে, দ্বীনি ব্যখ্যা দিয়ে, উম্মাহর প্রগতির পথে বাধা হিসেবে দাঁড় করিয়ে সকাল বিকেল রুটিন করে জবাই দিতো। 

আওয়ামী সেক্যুলার রেজিমে মামলা খেয়ে হলেও দেশে থাকা সম্ভব হচ্ছে, কিন্তু মডারেটস সেক্যুলামিস্টদের রেজিম হলে জানে বাঁচতে অন্তত মায়ানমারে গিয়ে হলেও পালানো লাগতো।।

আসুন! এদের সাথে পরিচিত হই, 

  • হুহ্!  আগে নিজে আয়মান সাদিক হন, তারপর তার সমালোচনা করিয়েন। 
  • -কই! ১০ মিনিটস স্কুলের কন্টেন্টে তো ভালো ছাড়া খারাপ কিছু দেখিনি, সেক্স এডুকেশন,  স্লিপিং অভার নাইট, পিরিয়ড এগ্লার গুরুত্ব ইসলামিস্টা কী বুঝবে। 
  • - সমকামিতা নিয়ে আপনার ঈমানে এতো জ্বলা ধরেছে ক্যান, কই দেশে এতো ধর্ষণ হয়, এতো দূর্নীতি হয় তা নিয়ে তো এতো জ্বলতে দেখিনা।
  • - ১০ মিনিটস স্কুলের অশ্লীল কন্টেন্ট নিয়ে কেনো এতো কথা, দেশে কী অশ্লীল নাটক সিনেমা হয়না, যখন বলিউড-হলিউডের মুভির অশ্লীলতা দেখে মজা নেন তখন কই থাকে আপনার ঈমান। [লাখ টাকার প্রশ্ন]
  • -সমকামিতা নিয়ে কথা বলে পক্ষান্তরে সমকামকেই প্রমোট করা হচ্ছে, তারচেয়ে ভালো নীরবে দাওয়াত ও ইসলাহের কাজ চালিয়ে যান।
  • -এটা কী ইসলামি রাস্ট্র, আয়মান সাদিক কী ইসলামিক স্কলার যে, আপনার কথামতো ইসলামি কন্টেন্ট বানাবে। 
  • -মূলত, আপনারা মোল্লারা আয়মান ভাইয়্যার উপরে উঠায় হিংসে হয়, পারলে ১০ মিনিটস স্কুলের মতো কিছু বানান তারপর সমালোচনা করতে আইসেন। 
  • -১০ মিনিটস স্কুল সমকামীতাকে সাপোর্ট করলে আপনার সমস্যা কী, মাদ্রাসায়ও তো প্রচুর বলাৎকার হয়, কথা বলতে হলে আগে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে বলুন, সেগুলোকে বন্ধ করে দিন।  

উপরের যুক্তিগুলো উগ্র সেক্যুলামিস্টদের, এদের কথা হলো দেশে যখন অনেক অন্যায় অশ্লীলতা হচ্ছে, সেখানে নির্দিষ্ট কোনো অন্যায়ের ব্যাপারে কথা বলা যাবেনা, যদি এতোই বলতে মন চায়, তাহলে আগে সেরকম কোনো প্রতিষ্ঠান বানাতে হবে, নতুবা চুপ থেকে তসবিহর দানা গুনতে হবে আর মাঝেমধ্যে তাদের মোটিভেশান শুনতে হবে। 

এসব ভাইদের প্রতি জানতে চাওয়া,

ধরুন! তাদের ফ্যামিলির কেউ কোনো এক লম্পটের কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হলো, এতে কী আমি ঐ ধর্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও ধর্ষণের এই কাজকে নিন্দার সাথে প্রতিবাদ করতে পারবো?  

নাকি বলবেন, দেশে প্রতিদিন কত ধর্ষণ হয় জানেন, আগে সেগুলোর প্রতিবাদ করে আসুন, তারপর আমার পরিবারের ধর্ষিতার ব্যাপারে নাহয় প্রতিবাদ করিয়েন। (তখন নিশ্চয় সেটা বলবেনা)

একসময় ইসলাম ও রাসূল সাঃ কে অবমাননাকারী নাস্তিকদের উপদ্রব বেড়ে যায়। এতে আ'ম মুসলিম জনতার কলিজায় প্রচন্ড আঘাত পায়, তাদের অন্তর-আত্মা প্রচণ্ড এক ঝাঁকনি খায়। ফলে তারা সামর্থ্যের মধ্যে প্রতিবাদ করেন, একেকজন একেক ভাষায়, একেক পদ্ধতিতে।

তখন এইসব উগ্র মডারেটরা প্রতিবাদকারীদের উপর ঝাঁপিয়ে  পড়ে। তাদেরকে গালিবাজ, মূর্খ, অশিক্ষিত প্রবাসী বলে গালি দিতে থাকে। এরা প্রতিবাদকারীদের মোকাবেলায় নাস্তিকদের সামনে ঢাল হয়ে প্রতিবাদীকারীদের নানান কায়দায় বধ করে চায়। 

যখন, তাওহিদী জনতা ইসলাম অবমাননাকারীদের ফাঁসির দাবীতে আন্দোলনে নামেন, তখন এরা চটপট করতে থাকেন, দেখে মনে হবে যেনো, এদের গর্দান ফাঁসী দড়িতে আটকে গেছে। 

তখন এরা তাওহীদি জনতাকে মোটিভেশান দিতে থাকে, দেখেন একজন ইসলাম অবমানাকারীকে ফাঁসি দিলেই তো শেষ, কিন্তু ফাঁসি না দিয়ে যদি ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে কয়েক বছর পর হয়তো পাক্কা ঈমানদার হয়ে  দাওয়াত ও তাবলীগ করতে পারে। 

এই একই সেক্যুলামিস্ট ভাইটি এই যুক্তি তার বাপ ভাইয়ের খুনির ক্ষেত্রে দিবেনা। কিন্তু সেই খুনির যদি ফাঁসী না হতো, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যে মানবতাবাদী বনে গিয়ে, অনেক বনী আদমকে মৃত্যুর হাত থেকেও বাঁচাতে পারতেন। আর  একজনকে বাঁচানো মানেই সারা জাহানের সব মানুষকে বাঁচিয়ে দেওয়া। 

আপনি এদেরকে কখনো অন্যায়, অশ্লীলতা ও দ্বীন বিরোধী  কাজের প্রতিবাদ করতে দেখবেন না, বরং প্রতিবাদীদের নানাভাবে নাজেহাল,  তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে, দেখবেন এরা ইসলামী শিক্ষা ও আলেমদের অপমান করছে নির্দ্বিধায়।

সমস্যা হচ্ছে, এই মডারেট সেক্যুলামিস্টদের তালে তাল মেলাচ্ছে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখা মূলধারার কিছু ইসলামিস্টরা, যা দুঃখজনক!