[জামায়াত ও অন্যান্য আলেমসমাজকে বলবো, আপনারা আপনাদের পূর্বপুরুষের রক্তের সাথে অনেক গাদ্দারি করেছেন, শহীদদের খুনিদেরকে বীর বানিয়ে সংবর্ধনা দিয়েছেন, গলায় ফুলের মালা পরিয়েছেন, তাদের পৈশাচিকতাকে বীরত্বগাথা বানিয়ে জনতাকে অনেক খাইয়েছেন, দয়া করে এই নিষ্ঠুরতম বেইমানী বন্ধ করুন! সত্য পরাজিত হলেও তার পক্ষে হিকমাহর সাথে অবিচল থাকুন, আল্লাহর নুসরাহ পাবেন।]
AbūSamīhah Sirājul-Islām ভাইয়ের লেখাটা পড়ার অনুরোধ,
মাওলানা মামূন সাহেব অপদস্ত/অপমানিত হলেন। আমাদের কলিজাতে ঘা লাগল।
কোন এক দাড়িওয়ালার দাড়ি ধরে তারা টানল, মামূন সাহেবের দাড়িতেও তারা টান দিয়েছিল। আমাদের আবেগ-অনুভূতির সবগুলা দুয়ারে প্রচণ্ড রকমের একটা বাড়ি মারা হল।
কিন্তু এগুলো কি নতুন কিছু? না, সেই ৭১ থেকে তারা এগুলো করে যাচ্ছে।
আপনি কি খোঁজ নিয়ে দেখেন ৭১ এবং তার পরবর্তী সময়ে কত মাওলানাকে জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছে এমন গর্তে, যাতে আগে থেকে খেজুর ও মাঁদার কাঁটা ভরে রাখা হয়েছিল?
আপনি কি জানেন "জয় বাংলা" বলতে অস্বীকার করায় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কত মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছে?
আপনি কি জানেন কত মাওলানার মুখ থেকে এক এক করে টেনে টেনে দাড়ি উপড়ানো হয়েছে?
আপনি কি জানেন কত মাওলানার শরীরকে ক্ষুর দিয়ে এঁকে এঁকে তাতে নূন-মরিচ মেখে তারপর তাকে হত্যা করা হয়েছে?
আপনি হয়তো মনে করেন তারা জামায়াতী ছিল।
না, তাঁদের অধিকাংশই ক্বওমী মাওলানা ছিলেন। ৭১ এ জামায়াত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে একটা শিশুবৎ সংগঠন ছিল। ক্বওমীদের সংগঠন নেজামে ইসলামী জামায়াতের চেয়ে কয়েকগুণ বড় সংগঠন ছিল এবং তাদের পাকিস্তানপন্থী মিলিশিয়াদের সংখ্যাও ছিল অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।
৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে সেই পাকিস্তানপন্থী ক্বওমী সংগঠন ধীরে ধীরে অনেকটাই বিলীন হয়ে গেছে, অন্যদিকে জামায়াত কয়েকগুণ বড় সংগঠনে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। ফলে তারা জামায়াতকে লক্ষ্য বানিয়েছিল। আর এদিকে আপনারাও হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধপন্থী হয়ে গেলেন ও "মুক্তিযোদ্ধা আলিম" খুঁজতে লাগলেন এবং এ ক্ষেত্রে জামায়াতীদের কোণঠাসা করতে পেরেছেন মনে করে হয়তো মনে মনে খুশিও ছিলেন।
কিন্তু লাভ হল কী? তারা দাড়িতে হাত দেয়া বাদ রাখে নি। আপনাদেরকে নির্যাতন ও খুন করা হতেও বিরত থাকে নি। ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী ভূমিকা গ্রহণ করা থেকে বিরত হয় নি। অথচ আপনারা হঠাৎ করে মুক্তিযুদ্ধ নামক ভারতীয় চুক্তিযুদ্ধটার সমর্থক হয়ে গেলেন। শকট মুগাবেকে জাতীয় হিরো বানালেন, তার কন্যাকে "মাদারে ক্বওমী" বানালেন, ইত্যাদি।
প্রিয় ক্বওমী হুজুরগণ। আসলে ফিরে যান। কিছু প্রজ্ঞা অর্জন করুন; নিজেদের আত্মাভিমান ত্যাগ করে নিজেদের ভাইদের সাথে বির্র ও তাক্বওয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করুন; রুহামাউ বায়নাকুম ওয়া আশিদ্দাউ আলাল-মুনাফিক্বীন হয়ে যান।
মুক্তিযুদ্ধ নামক গোলামীর মুচলেকা দেয়া যুদ্ধটাকে ঘৃণা করতে শিখুন। ইসলাম, মুসলিম এবং আমাদের মুসলিম তাহজীব ও তমুদ্দুনের উপর আঘাতের দরজা খুলে দিয়েছে ব্রাহ্মণ্যবাদ ও নাস্তিকতার দালালদের চাপিয়ে দেয়া সেই যুদ্ধটা। আপনি যতদিন সেই যুদ্ধটাকে গ্লোরিফাই করবেন ততদিন তারা আপনার উপর একহাত নিতে পারবে।
মনে রাখবেন মুক্তিযুদ্ধকে ঘৃণা করা মানে বাংলাদেশকে ঘৃণা করা নয়। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে নতুন কিছু অর্জন করা হয় নি। আমাদের পূর্বপূরুষগণ '৪৭ এ যে মানচিত্র অর্জন করেছিলেন ৭১ এ তাতে ১ ইঞ্চিও অতিরিক্ত যোগ করা হয় নি, বরং এই মানচিত্রের উপর ব্রাহ্মণ্যবাদী আধিপত্যবাদী শকুনীকে থাবা বসানোর সুযোগ করে দেয়া হয়েছে মাত্র।